গর্ভাবস্থার শেষ তিন মাস: সুস্থ সন্তান ও মায়ের জন্য প্রস্তুতির শ্রেষ্ঠ সময়
মাতৃত্বের সবচেয়ে সংবেদনশীল পর্যায় শুরু হয় গর্ভাবস্থার শেষ তিন মাসে। এই সময়টায় একটু সচেতনতা, একটু ভালোবাসাই পারে বদলে দিতে জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তটি। জেনে নিন কী করবেন, কী এড়িয়ে চলবেন।
#মাতৃত্বকালীন_পরামর্শ #মায়ের_সচেতনতা #সুস্থ_ভবিষ্যৎ #গর্ভাবস্থা
গর্ভাবস্থার প্রতিটি সময়ই গুরুত্বপূর্ণ হলেও, শেষ তিন মাস অর্থাৎ ২৫তম সপ্তাহ থেকে ৩৮তম সপ্তাহ পর্যন্ত সময়টা হয়ে ওঠে বিশেষ যত্নের। এই সময় মায়ের শরীরে এবং মানসিকতায় আসে ব্যাপক পরিবর্তন, আর ভ্রূণও ক্রমশ পরিণত হয়ে উঠে জন্মের জন্য প্রস্তুত।
🔶 শরীর ও ওজনের পরিবর্তন:
এই পর্যায়ে মায়ের পেট বড় হয় শিশুর বেড়ে ওঠার কারণে। তার সাথে বাড়তে থাকে ওজনও, যা প্রায় ৬-১০ কেজি পর্যন্ত হতে পারে।
🔶 শারীরিক দুর্বলতা ও চলাফেরা:
মায়ের শরীর অনেক বেশি ক্লান্ত ও দুর্বল হয়ে পড়ে, তাই অতিরিক্ত হাঁটাচলা বা কাজ এড়িয়ে চলা জরুরি। তবে একেবারে বসে বা শুয়ে থাকাও ঠিক নয়—হালকা হাঁটাহাঁটি ও স্ট্রেচিং শরীরকে স্বস্তি দিতে পারে।
🔶 কর্মজীবী মায়েদের জন্য:
এই সময় কাজ থেকে ছুটি নেওয়াই উত্তম। অফিস যাওয়ার ঝক্কি, যানবাহনের চাপ—সবই শরীরের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
🔶 ভ্রমণ ও সাবধানতা:
চিকিৎসকের অনুমতি ছাড়া দূরপাল্লার যাত্রা একেবারেই বর্জনীয়। অপ্রয়োজনীয় ঝুঁকি নেওয়ার সময় এটা নয়।
🔶 পুষ্টিকর খাবার:
মায়ের খাদ্যতালিকা সুষম ও সহজপাচ্য হতে হবে। সারাদিনে বারবার অল্প পরিমাণে খেলে গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটির সমস্যা কমে।
🔶 পায়ে পানি আসা:
অনেকক্ষণ একই ভঙ্গিতে বসে থাকলে পায়ে পানি জমতে পারে। তাই বসার স্টাইল মাঝে মাঝে বদলাতে হবে, তবে এমনভাবে নয় যাতে পেটে চাপ পড়ে।
🔶 প্রসবকালীন প্রস্তুতি:
এ সময় মানসিকভাবে প্রস্তুতি নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। রক্তের প্রয়োজন হতে পারে, তাই আগে থেকেই পরিকল্পনা করে রাখা ভালো।
🔶 মানসিক সাপোর্ট:
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো—মাকে ভালোভাবে মানসিক সাপোর্ট দেওয়া। ভয় নয়, সাহস ও আশ্বাসই এই সময়ের সবচেয়ে বড় ওষুধ।
একটি সুস্থ সন্তান জন্ম দিতে হলে শুধু মা নয়, পরিবারকেও হতে হবে যথেষ্ট সচেতন ও দায়িত্ববান। একটু যত্ন, একটু প্রস্তুতিই পারে জন্ম দিতে সুন্দর ভবিষ্যতের।
0 মন্তব্যসমূহ